Petrol and Diesel Prices hinted at cut Ahead of Puja: দেশে পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমানোর ইঙ্গিত মিলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের (ক্রুড অয়েল) দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার পরই এই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আগামী দিনে পুজোর আগে এই দাম কমানো হলে, দেশের মানুষ কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে পারেন। বিশেষ করে, সাধারণ ভোক্তারা, যাদের প্রতিদিনের যাতায়াতের খরচ অনেকটাই নির্ভর করে জ্বালানির দামের উপর।
পেট্রল ও ডিজেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি
বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম গত কয়েক মাসে বেশ কিছুটা নেমেছে। গত ৯ মাসে ক্রুড অয়েলের দাম সর্বাধিক হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে মার্কিন ক্রুড অয়েলের দাম ৭০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে, আর ব্রেন্ট ক্রুডের দাম দাঁড়িয়েছে ৭২.৭৫ ডলারে। তেলের এই দাম কমার অন্যতম কারণ হলো বিশ্ব বাজারে চাহিদা কমা এবং উৎপাদনের কিছুটা বৃদ্ধি।
তবে, ওপেক প্লাসের (Organization of the Petroleum Exporting Countries এবং তাদের সহযোগী দেশসমূহ) পক্ষ থেকে উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা আগামী অক্টোবর থেকে কার্যকর হতে পারে। এর ফলে তেলের দাম আবারও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, বর্তমানে তেলের দাম যেহেতু কমেছে, সেজন্য কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
আরও পড়ুন: আধার কার্ড আপডেট: মাত্র ১০ দিনের মধ্যে বিনামূল্যে সঠিক করতে হবে সমস্ত তথ্য।
যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের দাম কমেছে, কিন্তু ঘরোয়া বাজারে এখনো সেই প্রভাব দেখা যায়নি। দেশীয় তেল কোম্পানিগুলি আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েল কম দামে কিনলেও, সেই অনুযায়ী পেট্রল এবং ডিজেলের দাম কমায়নি। তবে তেল কোম্পানিগুলির লাভের পরিমাণ বেড়েছে। এই অতিরিক্ত লাভ থেকেই সরকার সাধারণ জনগণের জন্য জ্বালানির দাম কমানোর চিন্তাভাবনা করছে।
কবে কমবে দাম ?
২০২৩ সালের মার্চ মাসে পেট্রল ও ডিজেলের দাম লিটারে ২ টাকা কমানো হয়েছিল। এবারও আসন্ন পুজোর আগে পেট্রল ও ডিজেলের দাম লিটারে ৫ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত কমানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদি দাম কমানো হয়, তবে তা সাধারণ মানুষের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে পুজোর সময় যাতায়াত ও কেনাকাটার জন্য। এছাড়াও মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সরকার এই পদক্ষেপ নিতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।

তেলের দাম কমলে কী হবে ?
তেলের দাম কমলে এর প্রভাব বিভিন্ন ক্ষেত্রে পড়বে। তার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য দিক হলো:
- পরিবহন খরচ কমবে: পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমলে পরিবহন খরচও কমে যাবে। ফলে বাজারে পণ্যের দামেও কিছুটা হ্রাস আশা করা যেতে পারে।
- জ্বালানি খাতে সুবিধা: যানবাহন চালকদের খরচ কমে যাওয়ায় তারা কিছুটা আর্থিক সাশ্রয় করতে পারবেন।
- ব্যক্তিগত যাতায়াত খরচ কমবে: ব্যক্তিগত গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালকদের জন্য পেট্রলের দাম কমা মানে তাদের যাতায়াত খরচ কমে আসবে।
- পরিবেশগত প্রভাব: জ্বালানির দাম কমলে এর ব্যবহার বেড়ে যায়, যা পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, জ্বালানির ব্যবহারে কার্বন নির্গমন বৃদ্ধি পায়। তবে, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি বা হ্রাস সব সময় পরিবেশগত দিক বিবেচনা করে হয় না।
তেলের দামের এই ওঠানামায় ওপেক প্লাসের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওপেক প্লাস তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। উৎপাদন কমিয়ে তেলের দাম বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, লিবিয়া এবং ওপেক প্লাসের বাহিরের কিছু দেশ উৎপাদন বাড়ানোর কথা ভাবছে। এর ফলে বিশ্ব বাজারে তেলের দামের অবস্থা ভবিষ্যতে কেমন হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর কারণে বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ 2024।
FAQs (Frequently Asked Questions)
প্রশ্ন ১: পেট্রল ও ডিজেলের দাম কেন কমানো হতে পারে?
উত্তর: আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে, যা তেলের দাম কমানোর সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এছাড়া দেশের তেল কোম্পানিগুলির লাভের পরিমাণ বেড়েছে, যা সরকারকে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করছে।
প্রশ্ন ২: কত টাকা পর্যন্ত দাম কমানো হতে পারে?
উত্তর: আসন্ন পুজোর আগে পেট্রল ও ডিজেলের দাম লিটারে ৫ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রশ্ন ৩: ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্ত কিভাবে তেলের দাম প্রভাবিত করতে পারে?
উত্তর: ওপেক প্লাস তেলের উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে, যা আগামী অক্টোবর থেকে কার্যকর হতে পারে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম আবারও বাড়তে পারে।
প্রশ্ন ৪: তেলের দাম কমার ফলে সাধারণ মানুষ কীভাবে উপকৃত হবে?
উত্তর: তেলের দাম কমলে পরিবহন খরচ কমবে, ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহারকারীরা সাশ্রয় করতে পারবেন। এছাড়াও বাজারে পণ্যের দামেও কিছুটা হ্রাস আসতে পারে।
প্রশ্ন ৫: তেলের দাম কমলে পরিবেশের ওপর কি প্রভাব পড়তে পারে?
উত্তর: জ্বালানির দাম কমলে এর ব্যবহার বৃদ্ধি পায়, যা কার্বন নির্গমন বাড়িয়ে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রশ্ন ৬: মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে তেলের দাম কমার কি সম্পর্ক?
উত্তর: আসন্ন মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সরকার জ্বালানির দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিরোধীরা এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন।
সমাপ্তী কথা
পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমানো সাধারণ মানুষের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হতে পারে। বিশেষ করে পুজোর সময় যাতায়াত ও কেনাকাটার খরচ কমিয়ে কিছুটা স্বস্তি মিলবে। তবে, ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তেলের দাম আবারও বেড়ে যেতে পারে। সেজন্য দাম কমার সময় কিছুটা সাশ্রয় করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সরকারের পক্ষ থেকে মূল্য কমানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে আশা করা যায়, খুব শীঘ্রই দেশে পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমানোর ঘোষণা আসবে। অন্যান্য সকল তথ্য সবার আগে পেতে অবশ্যই হোয়াটসয়াপ চ্যানেলে যুক্ত হোন।